বাঙালি মুসলমানের আয়নাঘর থেকে রবীন্দ্রনাথের মুক্তি চাই

রবীন্দ্রনাথ বিতর্ক পূর্ব বাংলায় নতুন কিছু নয়। পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগ রবীন্দ্রনাথকে কালচারাল হেজিমনির জন্য থ্রেট মনে করত। এই আয়নাঘর থেকে রবীন্দ্রনাথের মুক্তি চাই।

তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো পাকিস্তানে রবীন্দ্রনাথকে নিষিদ্ধ করতে ৪০ জন কবি সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী বিবৃতি দিয়েছিলেন।

তাদের তালিকা:

১. মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ, ২. বিচারপতি আবদুল মওদুদ,৩. আবুল মনসুর আহমদ,৪. আবুল কালাম শামসুদ্দিন, ৫.অধ্যক্ষ ইব্রাহীম খাঁ, ৬. মজিবর রহমান খাঁ, ৭. মোহাম্মদ মোদাব্বের, ৮. কবি আহসান হাবীব ১৩. বেনজীর আহমদ, ১৪. কবি মইনুদ্দিন, ১৫. অধ্যক্ষ শেখ শরফুদ্দিন, ১৬. আ.কা.ম. আদমউদ্দিন, ১৭.তালিম হোসেন, ১৮. শাহেদ আলী, ১৯. আ.ন.ম. বজলুর রশীদ, ২০. মোহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ,

২১. সানাউল্লাহ নী, ২২. কবি আবদুস সাত্তার, ২৩. কাজী আবুল কাশেম (শিল্পী), ২৪. মুফাখখারুল ইসলাম, ২৫. শামসুল হক, ২৬. ওসমান গণি, ২৭. মফিজ উদ্দিন আহমদ, ২৮. আনিসুল হক চৌধুরী, ২৯. মোস্তফা কামাল, ৩০. অধ্যাপক মোহাম্মদ মতিউর রহমান, ৩১. জহুরুল হক, ৩২. ফারুক আহমদ, ৩৩. শরফুদ্দীন আহমদ, ৩৪. বেগম হোসনে আরা, ৩৫. মাফরুহা চৌধুরী, ৩৬. মোহাম্মদ নাসির আলী, ৩৭. এম. নূরুল ইসলাম, ৩৮. কবি জাহানারা আরজু, ৩৯. কাজী আবদুল ওয়াদুদ, ৪০. আখতার উল-আলম।

এদের একেকজন পন্ডিত ব্যক্তি। কেউ মাদ্রাসার ছিলেন না। এদের প্রায় ৯৯% মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীনতার পক্ষে ছিলেন। তাদের মধ্যে আলী আহসানের বক্তব্য কোট করলে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বলেছেন, “আমাদের সাংস্কুতিক স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখার এবং হয়তো বা জাতীয় সংহতির জন্য যদি প্রয়োজন হয়, আমরা রবীন্দ্রনাথকেও অস্বীকার করতে প্রস্তুত রয়েছি। সাহিত্যের চাইতে রাষ্ট্রীয় সংহতির প্রয়োজন আমাদের বেশি।? পূর্ব বাংলার সাহিত্যক্ষেত্রে আমাদের উত্তরাধিকার হলো ইসলামের প্রবহমান ঐতিহ্য, অগণিত অমার্জিত পুঁথি সাহিত্য, অজস্র গ্রাম্যগাথা, বাউল ও অসংস্কৃত অঙ্গের পল্লীগান”।

আয়নাঘর থেকে রবীন্দ্রনাথের মুক্তি চাই।

স্বাধীনতার পর সৈয়দ আলী আহসানের দায়িত্ব বুঝে নেন আহমদ ছফা। তার ভাষাও একই। তিনি ও তার গুরু প্রফেসর রাজ্জাক সাহেব রবীন্দ্রনাথ লঘু করতে চেয়েছেন সব সময়। বাঙালি মুসলমানের স্বান্ত্রযতা ব এক ধরণের সাহিত্য ভাষা আমদানির চেষ্টা করেছিলেন। ছফার শিষ্য সলিমুল্লাহ খান পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথকে ‘উত্খাত’ করতে নানা জায়গায় ভাষণ দিয়ে বেরিয়েছেন। তো, এগুলো বিগত ৫৩ বছর ধরে চলেছে।

আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের অতি সংখ্যালঘু বিশেষত ১৯৭০ এর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট সার্কেলে কয়েকজন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের “আমার সোনার বাংলা” জাতীয় সংগীত করা হবে।এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতীয় সংগীত হিসেবে মুক্তিযোদ্ধারা এ গান গাইতেন।

কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগে যে সংকোচ ছিল সেটি এখনো রয়েছে।রবীন্দ্রনাথের সবচেয়ে বড় অপরাধ তার নামের শেষে “ঠাকুর”।যদি ঠাকুর না হয়ে খান, মিয়া, আহমেদ হতো তাহলে এমন সমস্যা হতো না।

এই ক্ষোভ থেকে রবীন্দ্রনাথকে এখনো বাংলাদেশে “Cultural Fascist” ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে।

আয়নাঘর

অথচ রবীন্দ্রনাথ ন্যাশনালিজমে বিশ্বাস করতেন না। তিনি নিজেকে World Citizen বলতেন।

সুতরাং বাংলাদেশে জাতীয় সংগীত নিয়ে চলমান বিতর্ক থাকবেই। এজন্য রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে পাকিস্তান আমল থেকে।

আমার এসেসমেন্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপছন্দ করে। তাই আমার বক্তব্য হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বাংলাদেশ থেকে মুক্তি দেওয়া হোক তার লেখা জাতীয় সংগীত বাতিল করে।

যতদিন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের রচয়িতা থাকবেন ততদিন রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে ঘৃণার চাষাবাদ চলমান থাকবে।এছাড়া ডি এল রায় ভারতীয় বিধায় তার গান জাতীয় সংগীত করার দরকার নেই।

বাংলাদেশ সরকারের উচিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহন করা কোন মুসলমান ব্যক্তির গান জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করা।

Related posts

ইসলামপন্থীরা যেভাবে বাংলাদেশের ওয়ান অন টেররে দিল্লির ব্রাহ্মন্যবাদী আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেয়েছিল

cw

The Story of Daliya Al-Karmel: From the Kitchen to the Battlefield

cw

বিএনপিপন্থী চিন্তাবিদদের রাহুল গান্ধীকে নিয়ে ভুল চিন্তাভাবনা

cw

1 comment

তাহমিনা চৌধুরি প্রীতি ভাইরাল ভিডিও | Fstd Solution September 12, 2024 at 10:53 pm

[…] জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সার, টিকটিকার ও ইউটিউবার। সে বাংলাদেশের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করে […]

Reply

Leave a Comment